Sunday, December 10, 2017
*পিতা-মাতার জন্য সবচেয়ে উত্তম দুআ এবং দুআ করার পদ্ধতি
*পিতা-মাতার জন্য সবচেয়ে উত্তম দুআ এবং দুআ করার পদ্ধতি*
প্রশ্ন: পিতামাতার নেক হায়াত, দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণের জন্য কিভাবে দোয়া করলে ভালো হয়? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর:
দুআর বিষয়টি উন্মুক্ত। অর্থাৎ আমরা দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রর্থনা করে নিজেদের মনমত যত খুশি দুআ করতে পারি। বাবা মা দুনিয়াবী সম্পর্কের দিকে দিয়ে সবচেয়ে কাছে। তাই সন্তানদের উচিৎ, তাদের জন্য অধিক পরিমানে দুআ করা। জীবিত অবস্থায় তাদের সুস্থাস্থ, ঈমানী মজবুতী, আমলে সালেহ, গুনাহ মোচন, শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে হেফাজত এবং সাবির্ক কল্যাণময় জীবনের জন্য দুআ করব।
আর তারা মারা গেলেও তাদের জন্য দুআ করব। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, সৎ সন্তানগণ যদি মৃত বাবা-মার জন্য দুআ করে তাহলে কবরে থেকেও তারা সওয়াব অর্জন করতে থাকেন।
তাই মারা যাওয়ার পর, তাদের জন্য রহমত, মাগফিরাত, কবরের প্রশস্ততা, কবরকে আলোকময় করা, তাদের হিসাব-নিকাশ সহজ করা, জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাতে প্রবেশের জন্য যত বেশি সম্ভব দুআ করা কতর্ব্য।
*বাবা-মার জন্য কুরআনের দুআ:*
কুরআনে বর্নিত দুআগুলো সবচেয়ে উত্তম-এতে কোন সন্দেহ নাই। তাই আমরা কুরআনের নিম্নোক্ত দুয়াগুলো বেশি বেশি করার চেষ্টা করব।
জিবীত বা মৃত পিতামাতার জন্য দুয়া;
=============================
♥১-দুয়া:
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
অর্থ :হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন
রর্ব্বি হাম্হুমা-কামা-রব্বাইয়া-নী ছগীরা।
(সূরা আল-ইসরা - ১৭:২৪)
♥২- দুয়া:
رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
অর্থ : হে আমাদের রব, যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।
রব্বানাগফিরলী অলি ওয়ালিদাইয়্যা অলিলমুমিনীনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসা-ব্।
(সূরা ইবরাহিম - ১৪:-৪১)
*পিতামাতার জন্য দুআ এবং আমাদের সমাজের বিদআতী প্রচলন*
আমাদের সমাজের অত্যন্ত বহুল প্রচলন হল, সন্তানরা পিতামাতার জন্য তেমন দুআ করে না! বরং তারা হাফেয ও মাওলানাদেরকে দাওয়াত দিয়ে টাকা-পয়সার বিনিময়ে দুআ করিয়ে নেয়। এটাকে ভাড়ায় দুআ করানো বলা যায়।
আর এই সুযোগে পেটপুজারী অর্থলোভী একশ্রেণীর মানুষ মিলাদ, চল্লিশা, খুরআনখানী, শবিনা খতম ইত্যাদি অসংখ্য বিদআতী কার্যক্রমের মাধ্যমে কলাকৌশলে কিছু অর্থ-কড়ি কামিয়ে নেয়। অথচ ইসলামে এই সব জঘন্যতম বিদআত।
অথচ এ সকল বিদআতের আয়োজন করা, এগুলোতে অংশ গ্রহণ করা, বিদআতীদেরকে ভাড়া করে পয়সা দেয়া.. সবই ইসলামের দৃষ্টিতে গুনাহ ও নিষিদ্ধ কাজ।
তাই আমাদের কতর্ব্য, ভাড়া করা আলেম-হাফেযদের দ্বারা দুআ না করে নিজেরা নিজেদের পিতা-মাতার জন্য পরম আন্তরিকতা সহকারে কান্নাকাটি করে দুআ করব। এতে তারা কবরে থেকেও সওয়াব অর্জন করবেন বলে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
আবু হুরয়রা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ﺇﺫﺍ ﻣﺎﺕ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﺍﻧﻘﻄﻊ ﻋﻨﻪ ﻋﻤﻠﻪ ﺇﻻ ﻣﻦ ﺛﻼﺛﺔ ﺇﻻ ﻣﻦ ﺻﺪﻗﺔ ﺟﺎﺭﻳﺔ ﺃﻭ ﻋﻠﻢ ﻳﻨﺘﻔﻊ ﺑﻪ ﺃﻭ ﻭﻟﺪ ﺻﺎﻟﺢ ﻳﺪﻋﻮ ﻟﻪ
“যখন মানুষ মারা যায় তখন তার আমল তার বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি ( আমল চলতে থাকে)। যথা:
-সাদকায়ে জারিয়া, উপকারী ইলম (জ্ঞান), সৎ সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৩১।)
আল্লাহ তাওফিক দান করুন।
~উত্তর দিয়েছেন শাইখ আব্দুল্লাহীল হাদী
Subscribe to:
Post Comments (Atom)

No comments:
Post a Comment